রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫

Contact: nafissadique090@gmail.com, shatil2208@gmail.com

মুসলমানদের কি কোন কোন নিজস্ব ধর্মীয় উৎসব আছে?

মাঝে মাঝে খুব অবাক লাগে যে পৃথিবীতে এত এত মুসলিম ইসলামকে ধর্ম হিসেবে পালন করে। কিন্তু এই ধর্মের নিজস্বতা বলতে কিছুই নেই। তাদের নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত, আজান, ওজুসহ বেশিরভাগ বিষয়ই অন্য ধর্ম থেকে নকল করা হয়েছে। তাদের ধর্মগ্রন্থের অনেক কিছুই অন্য ধর্মের গ্রন্থ থেকে নকল করা। মুসলিমরা মূর্তিকে ঘৃণা করে, আবার একটা অচল অথর্ব কালো পাথরকে চুমু খায়। তারা মানুষের তৈরী প্রতিমার বিরোধীতা করে, আবার নিজেরাই মানুষের তৈরী কাবাঘরকে সিজদাহ করে। সেলুকাস।

এসব থেকেই বোঝা যায় ইসলাম ধর্ম পুরোপুরি পৌত্তলিক প্রভাবমুক্ত নয়। বরং ইহুদি, খ্রিষ্টান, প্যাগান, জরাথুস্ট্রাসহ কয়েকটি ধর্ম থেকে এটা সেটা নিয়ে জোড়াতালি দিয়ে এই ধর্ম তৈরী করা হয়েছে। ইসলাম চালু হওয়ার পর মদিনার পৌত্তলিকদের দেখাদেখি ইসলামের নবী দুটি উৎসবের দিন নির্ধারণ করেন। যেগুলোর নাম ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। গোটা একটা জাতির এত কোটি কোটি অনুসারীদের কোন মৌলিক উৎসব নাই। কি দুর্ভাগ্য। ইসলামের আবিষ্কারকের উদ্ভাবনী ক্ষমতা এতই কম ছিলো যে, তার মাথা থেকে নতুন কোন উৎসবের ধারণা বের হয়নি। আফসোস।

আজ প্রবারণা পূর্ণিমা, আশ্বিনী পূর্ণিমা, কোজাগরী পূর্ণিমা, শারদ পূর্ণিমা। আজ বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম একটি ধর্মীয় উৎসব। বৌদ্ধ ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে: রাজকুমার সিদ্ধার্থ সন্নাসব্রত গ্রহণের পর ভাবলেন এই সন্নাসজীবনে এমন রাজকীয় বাহারি চুলের কি দরকার! তরবারি দিয়ে চুল কেটে চুলের গোছা ছুড়ে দিলেন আকাশের দিকে। স্বর্গের দেবতা ইন্দ্র সেই চুলের গোছাকে হীরা-মনি দিয়ে সাজিয়ে রাখলেন, যার নাম ‘চুলামনি চৈত্য’। বৌদ্ধধর্মের অনুসারীরা আকাশে ফানুস উড়িয়ে চুলামনি চৈত্যের পূজা করে।

বাহারি রঙের ফানুস যখন আকাশে ওড়ে তখন রাতের আকাশটা রঙিন হয়ে যায়। দেখতে সুন্দর লাগে। এই সৌন্দর্য মুসলিমদের কাছে মূল্যহীন। তাদের কাছে ‘সুন্দরের’ সংজ্ঞাটা আলাদা। তাদের উৎসবে নেই কোন আনন্দ, নেই উদযাপন, নেই কোন সৌন্দর্য, নেই কোন সৃজনশীলতা। পৃথিবীর সমস্ত ধর্মের উৎসবে সমস্ত বিশ্বের সব ধর্মের বিভিন্ন জাতির মানুষ অংশ নিলেও, একমাত্র মুসলমানদের কাছেই আপনারা শুনবেন, “ধর্ম যার যার, উৎসবও তার তার।” কি কুৎসিত কথা। আল্লাহ যেন সমস্ত অসুন্দরকে একসাথে জোড়া লাগিয়ে এই ধর্মটা তৈরী করেছেন।

মুসলমানদের কোন ধর্মীয় উৎসব নেই। ইসলাম আবির্ভাবের পূর্বেই মদিনার লোকেরা দুটো উৎসব পালন করতো। তাদের দেখাদেখি ইসলামও দুটো ঈদের প্রচলন করে। কিন্তু দুই ঈদকে তারা তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বলে দাবী করলেও, এগুলো কোনভাবেই উৎসবের কাতারে পড়েনা। ঈদের দিন ঈদ উপলক্ষে মুসলমানরা ওয়াজিব নামাজ পড়ে। নামাজ কি কোন উৎসব? নামাজের সাথে উৎসবের সম্পর্ক কি? উৎসবে যদি আনন্দ না থাকে, উদযাপন না থাকে, হাসি না থাকে, উচ্ছ্বাস না থাকে, সকলের অংশগ্রহণ না থাকে- সেটা উৎসব হয় কি করে?

বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ধর্মের মানুষের উৎসব যারা কখনো দেখেনি তাদের কাছে ঈদকে উৎসব মনে হলেও হতে পারে। সেসব উৎসবে থাকে রঙের মেলা, থাকে আল্পনা, থাকে গান-নৃত্য, থাকে বিভিন্ন ট্রাডিশনাল খাবার-দাবার, পোশাক-আশাকের সমারোহ। তারা নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী তাদের দোকানপাট, বাড়িঘর আলোকসজ্জা করে, আল্পনা আঁকায়। উৎসবের ভেতরে থাকে বিভিন্ন পশু-পাখিকে খাওয়ানোর উৎসব, সাজগোজের উৎসব। প্রাণীজগতের মঙ্গল কামনায় থাকে দৃষ্টিনন্দন র‍্যালী। বিভিন্ন স্থানে দলবদ্ধভাবে সঙ্গীত কিংবা নৃত্য।

লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন এসমস্ত বিষয়ই ইসলামে হারাম। তারা না পারবে সাজগোজ করতে, না পারবে আলোকসজ্জা করতে, না পারবে গান করতে, না পারবে নৃত্য করতে, না পারবে চিত্রাঙ্কণ করতে। তাদের কোন ট্রাডিশনাল জামাকাপড় নেই, সাজগোজ নেই, নাচ-গান নেই, খাবার দাবার নেই। তারা কিভাবে কোন উৎসব পালন করবে?

ইসলামিক মিলিটারি জীবনব্যবস্থায় সকল সৃষ্টিশীলতা হারাম, সকল আনন্দ হারাম। তাই তাদের জীবনে কোন আনন্দ নেই, সুখ নেই। ফেস্টিভ্যাল মানুষের মানসিক অবস্থার উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। একইভাবে গান, নৃত্য, চিত্রাঙ্কণ মানুষের মনকে প্রশান্ত করে। ইসলাম আবির্ভাবের হাজার হাজার বছর আগে থেকেই মানুষ এগুলোতে অভ্যস্ত। তাই মাত্র দেড় হাজার বছর আগের কোন মতবাদের পক্ষে হোমো স্যাপিয়েন্সের জিন থেকে এসব মেমোরি মুছে ফেলা অসম্ভব। আর যারা সবকিছুকে হারাম ভেবে ত্যাগ করে তারা হয়ে যায় হিংস্র।

তাই ইসলাম কেন, কোন ধর্মের পক্ষেই মানুষকে সার্বজনীন উৎসবে অংশগ্রহণ ঠেকানো অসম্ভব। তারা ১৪০০ বছর ধরে চেষ্টা করেও মুসলমানদের ১০% কেও এগুলো থেকে বিরত রাখতে পারেনি, পারবেওনা।

ধন্যবাদ ও শুভকামনা সকলের জন্য।

© নাফিস সাদিক শাতিল/ NAFIS SADIQUE SHATIL

এই ক্যাটাগরির আরো ব্লগপোস্ট পড়তে এখানে ক্লিক করুন

পড়ুন যুক্তিবিদ্যা বিষয়ক বইঃ Debating God With a Brain

পড়ুন যুক্তিবিদ্যা বিষয়ক বইঃ Debating God With a Brain

পড়ুন ফিকশন বইঃ The Atheist Who Met God and Devil

পড়ুন ভ্রমণ কাহিনীঃ Adventure of Ryan and George

বিজ্ঞানীদের জীবনকাহিনী নিয়ে বইঃ From Apple to Algorithm

বইগুলোর প্রিন্টেড ভার্সন কিনুন আমাজন থেকে।

Tags :

Recent News

Popular News

Find Us on Youtube